২০শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

২০১ রানের বড় হার বাংলাদেশের

২০১ রানের বড় হার বাংলাদেশের

বোলারদের কল্যাণে অন্তত চার টেস্ট পর জয়ের সম্ভাবনা জেগেছিল বাংলাদেশের। কিন্তু আবারও সেই পুরোনো রোগ– ‘ব্যাটিং বিপর্যয়’। যে রোগে একে একে আক্রান্ত হয়েছেন অভিজ্ঞ মুমিনুল হক, লিটন দাস, মেহেদী মিরাজ থেকে শুরু করে তরুণ জাকির হাসান ও মাহমুদুল হাসান জয়রা। জাকের আলি সেই ক্ষত সেরে ওঠার চেষ্টা চালালেও, সেটি জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। ফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২০১ রানে হেরে টেস্ট সিরিজ শুরু করল বাংলাদেশ।

এ নিয়ে টানা পঞ্চম টেস্টে হারলো লিটন-মিরাজরা। ভারতে ‘গো-হারা’ সিরিজ (দুটি টেস্ট, তিনটি টি-টোয়েন্টি) শেষে দেশের মাটিতে ফিরে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছেও দুই টেস্টে ধবলধোলাই হয় বাংলাদেশ। ক্যারিবীয় ভূখণ্ডে গিয়েও তারা সেই ধারা–ই অব্যাহত রাখল। অ্যান্টিগা টেস্টে বাংলাদেশের সামনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পুঁজি ছিল ৩৩৩ রানের। বিপরীতে ব্যাটিং ব্যর্থতায় টাইগারদের দৌড় মাত্র ১৩২ রানেই থেমে গেছে।

স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে হারের মঞ্চ আগেই প্রস্তুত রেখেছিলেন বাংলাদেশের স্বীকৃত ব্যাটাররা। লক্ষ্য তাড়ায় গতকাল চতুর্থ দিন শেষ হওয়ার আগেই তারা ১০৯ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে বসেছিল। তখনও তারা উইন্ডিজদের চেয়ে ২২৪ রানে পিছিয়ে। ফলে স্বাগতিকদের সমীকরণই ছিল সহজ। আজ (মঙ্গলবার) পঞ্চম দিনে খেলতে নেমে ঘণ্টা পেরোনোর আগেই ক্যারিবীয়রা সমীকরণ মিলিয়ে ফেলেছে। শেষ উইকেটে ব্যাটে থাকা শরিফুল ইসলামের কাঁধে আঘাত করে আলজারি জোসেফের একটি বাউন্সার। ফিজিও এসে তাকে পরীক্ষা করলে রিটায়ার্ড হার্ট ঘোষণা দিয়ে মাঠ ছাড়েন ক্রিজে থাকা শরিফুল-তাসকিন।

পঞ্চম দিনে খেলতে নামার আগেই অবিশ্বাস্য কিছু না ঘটলে বাংলাদেশের হার ছিল অবধারিত। দিনের দ্বিতীয় ওভারে আউট হয়ে সেটি সঠিক প্রমাণ করেন হাসান মাহমুদ। আলজারি জোসেফের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এই টেলএন্ডার। এরপর জাকের দুটি বাউন্ডারি মেরে চাপ সামলানোর চেষ্টা করেছিলেন ঠিক, তিনিও একই বোলারের ডেলিভারিতে লেগস্টাম্প ছেড়ে খেলতে গিয়ে এলবিডব্লু হয়েছেন। বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩১ রান এসেছে এই উইকেটরক্ষক ব্যাটারের ব্যাটে।

এর আগে চতুর্থ দিন তাসকিন আহমেদের পাঁচ শিকারে মাত্র ১৫২ রানেই গুটিয়ে যায় উইন্ডিজদের দ্বিতীয় ইনিংস। যা ছিল এই টাইগার পেসারের প্রথম টেস্ট ফাইফার। তবে প্রথম ইনিংস থেকেই ১৮১ রানের লিড পেয়ে যায় স্বাগতিকরা। যা তাদের জয়ের মূল পুঁজিটা এনে দিয়েছিল। তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে ছিল ৯ উইকেটে ২৬৯ রান। পিছিয়ে থেকেও তাদের ইনিংস ঘোষণায় কিছুটা চমক জাগিয়েছিল। তবে বোলারদের পারফরম্যান্স সেটিকেই যেন প্রমাণ করছিল। কিন্তু ব্যাটাররা তার মূল্য দিতে পারলেই কই!

দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের হয়ে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৪৫ রান করেছেন মেহেদী মিরাজ। নাজমুল হোসেন শান্ত’র অনুপস্থিতিতে এই সিরিজে অধিনায়কত্ব সামলানো এই অলরাউন্ডারের পর উল্লেখযোগ্য কেবল ৩১ রান আসে জাকের আলির ব্যাটে। এ ছাড়া লিটন দাস ২২ এবং মুমিনুল ১১ রান করে আউট হয়ে হারের পথ সুগম করেন। তরুণ ক্রিকেটাররাও ছিলেন দুই ইনিংসজুড়েই ব্যর্থ। দ্বিতীয় ইনিংসে দুই ওপেনার জয় ৬ ও জাকির ০ রানে আউট হন। শাহাদাত হোসেন দীপুর ব্যাটে আসে কেবল ৪ রান।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন কেমার রোচ ও জেইডেন সিলস। এ ছাড়া আলজারি ২ এবং শামার জোসেফ নেন ১ উইকেট। এর আগে উইন্ডিজদের অল্পতে গুটিয়ে দেওয়ার পথে তাসকিন ৬০ রানে নেন ৬ উইকেট। যা টেস্টে তার ক্যারিয়ারসেরা বোলিং ফিগার।

blank

নিজস্ব প্রতিবেদক

https://dakgharnews.com

Related post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *