২রা এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

২০২৪ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৮ হাজার ৫৪৩ জন

২০২৪ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৮ হাজার ৫৪৩ জন

২০২৪ সালে ছয় হাজার ৩৫৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় আট হাজার ৫৪৩ জন নিহত ও ১২ হাজার ৬০৮ জন আহত হয়েছেন।

শনিবার (৪ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ মনিটরিং করে প্রতিবছরের ন্যায় এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে সংগঠনটি।

সংবাদ সম্মেলনে মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, গত ১০ বছরে মোটরসাইকেলের সংখ্যা ১৫ লাখ থেকে ৬০ লাখে উন্নীত হয়েছে। নতুন করে ৬০ লাখ ব্যাটারিচালিত রিকশা রাস্তায় নামার পাশাপাশি ছোট যানবাহনের সংখ্যাও অবাধে বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এসব যানবাহনের অবাধে চলাচলের কারণে সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ভয়াবহভাবে বেড়েছে।

blank

সড়ক দুর্ঘটনার বেশ কিছু কারণ জানিয়ে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার প্রথম কারণ বেপরোয়া গতি ও বিপদজনক ওভারটেকিং। এছাড়া সড়কের নির্মাণ ত্রুটি, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা, চালকের অদক্ষতা ও ট্রাফিক আইন সংক্রান্ত অজ্ঞতা, পরিবহন মালিকদের বেপরোয়া মনোভাব, গাড়ী চালানোর সময় মোবাইল বা হেড ফোন ব্যবহার, মাদক সেবন করে যানবাহন চালানো, অরক্ষিত রেলক্রসিং, রোড ডিভাইডার পর্যাপ্ত উঁচু না থাকা অন্যতম।

এই সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বেশকিছু সুপারিশমালা করেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এর মধ্যে মানুষের জীবন রক্ষায় সরকারের প্রথম অগ্রাধিকার হিসেবে সড়ক নিরাপত্তার বিষয়টি অর্ন্তভুক্ত করা। দ্রুত সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করে ব্যাপক কার্যক্রম শুরু করা। সড়ক নিরাপত্তায় বাজেট বরাদ্ধ বাড়ানো, সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ে সড়ক নিরাপত্তা উইং চালু করা।

সড়ক নিরাপত্তায় এরইমধ্যে প্রণীত যাবতীয় সুপারিশমালা বাস্তবায়নে নানামুখী কার্যক্রম শুরু করা। দেশের সড়ক-মহাসড়কে রোড সাইন, রোড মার্কিং (ট্রাফিক চিহ্ন) স্থাপন করা। জেব্রা ক্রসিং অঙ্কন ও আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা।

গণপরিবহন চালকদের অত্যাধুনিক প্রশিক্ষণ ও নৈতিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা। সড়ক পরিবহন সেক্টরে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। অনিয়ম-দুর্নীতি ও সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করা। গাড়ির নিবন্ধন, ফিটনেস ও চালকদের লাইসেন্স প্রদানের পদ্ধতি উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিকায়ন করা। সড়ক দুর্ঘটনায় আর্থিক সহায়তা তহবিলে আবেদনের সময়সীমা ৬ মাস বৃদ্ধি করা। স্মার্ট গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে দেশব্যাপী পর্যাপ্ত মানসম্মত নতুন বাস সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নেওয়া।

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, পরিবহন সেক্টরে সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে ১ শতাংশ ভূমিকাও রাখেনি অন্তর্বর্তী সরকার। অথচ এসব দুর্ঘটনা কাঠামোগত হত্যা। নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে সরকার, পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের কাজ করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সমাজ উন্নয়ন কর্মী আবদুল্লাহ আল জহির স্বপন, যাত্রী কল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতি তাওহীদুল হক, যুগ্ম মহাসচিব মনিরুল হক, প্রচার সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাসেল, দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের সদস্য মো. জিয়াউল হক চৌধুরী প্রমুখ।

blank

নিজস্ব প্রতিবেদক

https://dakgharnews.com

Related post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *